করোনা ভাইরাস বর্তমানে সর্বাধিক ব্যবহৃত একটি শব্দ। করোনা ভাইরাস বলতে কোনো নির্দিষ্ট ভাইরাস নয় এর দ্বারা ভাইরাসের একটি সম্প্রদায়কে বোঝায়। এই ভাইরাস স্তন্যপায়ী প্রাণী ( মানুষের শ্বাসনালি সংক্রমণ ) ও পাখিদেরকে আক্রমন করে।
🖌️ল্যাটিন শব্দ "করোনা" থেকে এই ভাইরাসের নাম টা এসেছে, যার অর্থ crown বা মুকুট। দ্বিমাত্রিক সঞ্চালন ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্রে ভাইরাসটির আবরণ থেকে গদা-আকৃতির প্রোটিনের কাঁটাগুলির কারণে এটিকে অনেকটা মুকুট বা সৌর করোনার মত দেখায়। মানব শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি সর্বপ্রথম পর্যবেক্ষন করেছিলেন June Almeida ও David Tyrrell এবং Nature পত্রিকায় ভাইরাস টি 1968 সালে নতুন সম্প্রদায় রূপে আত্মপ্রকাশ করে। তবে ভাইরাসটির সর্বপ্রথম দেখা মিলেছিল 1930 সালে North Dakota তে চিকেনের মধ্যে।
🖌️বিভিন্ন সমযযে ভাইরাসটির আরো বেশ কিছু প্রজাতি পাওয়া যায় যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ২০০৩ সালে "SARS-COV", ২০০৪ সালে ‘HCOVNL63', ২০০৫ সালে ‘HKU1', ২০১২ সালে ‘MERS-COV', এবং সর্বশেষ ২০১৯ সাল চীনে SARS-COV-2' পাওয়া যায় যা বর্তমানে সাধারণত নোভেল করোনাভাইরাস বা NCOV নামে পরিচিত। করোনাভাইরাসের অনেক রকম প্রজাতি আছে, কিন্তু এর মধ্যে মাত্র ছয়টি প্রজাতি মানুষের দেহে সংক্রমিত হতে পারে। তবে নতুন ধরণের ভাইরাসের কারণে সেই সংখ্যা এখন থেকে হবে সাতটি।
🖌️এই নতুন রোগের কারণে বর্তমান পৃথিবীতে (6 জুন 2020) প্রায় 70 লক্ষ মানুষ আক্রান্ত এবং 4 লক্ষ মানুষ মৃত। নতুন এই রোগটিকে প্রথমদিকে নানা নামে ডাকা হচ্ছিল, যেমন: 'চায়না ভাইরাস', 'করোনাভাইরাস', '২০১৯ এনকভ', 'নতুন ভাইরাস', 'রহস্য ভাইরাস' ইত্যাদি। এ বছরের (2020সাল) ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা রোগটির আনুষ্ঠানিক নাম দেয় COVID-19 যা 'করোনাভাইরাস ডিজিজ ২০১৯'-এর সংক্ষিপ্ত রূপ।
🖌️প্রথম থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করে আসছেন যে এই ভাইরাস উহানের ল্যাবে। সেই অভিযোগে সিলমোহর দিলেন নোবেলজয়ী ফরাসি বিজ্ঞানী লুক মন্তাজিনিয়ের। তাঁর দাবি, করোনা ভাইরাস মানুষের তৈরি। উহানের গবেষণাগারেই তৈরি হয়েছে এই জীবাণু। ২০০৮ সালে HIV ভাইরাস আবিষ্কারের জন্য নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন লুক মন্তাজিনিয়ের। ফলে তাঁর অভিযোগ ফাঁকা বুলি বা ভিত্তিহীন জল্পনা নয় বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এক ফরাসি সংবাদমাধ্যমে মন্তাজিনিয়ের দাবি করেন, করোনা ভাইরাসের মধ্যে HIV’র পাশাপাশি ম্যালেরিয়ার জীবাণুও রয়েছে। যা অত্যন্ত সন্দেহজনক। কোভিড-১৯-এর যে সমস্ত বৈশিষ্ট্য দেখা গিয়েছে, তা প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি হতে পারে না। তিনি আর জানান, ইউহান ন্যাশনাল বায়োসেফটি ল্যাবেরটরিতে প্রায় দু’দশক ধরে করোনা ভাইরাস নিয়ে গবেষণা চলছে। সম্ভবত, সেখান থেকেই দুর্ঘটনাবশত এই ভাইরাসটি বাইরে ছড়িয়ে পড়েছে।
🖌️মানব শরীরে এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণ গুলি হলো জ্বর (নিউমোনিয়া ধরনের), কাশি, শ্বাসকষ্ট। এখনো পর্যন্ত এই রোগের কোনো ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হওয়ায় ডাক্তার ও বিশেষজ্ঞরা নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার পর লক্ষণ গুলি দেখাদিতে 14 দিন সময় লাগতে পারে।
📍এই ভাইরাস কোনো সংক্রমিত ব্যক্তির থেকে যেভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে.....
1. কাশি বা হাঁচির ফোঁটার মাধ্যমে।
2. স্পর্শ করা বা ব্যক্তিগত যোগাযোগের মাধ্যমে।
3. এমন কোনো স্থান স্পর্শ করা যেখানে ভাইরাস রয়েছে, তারপর হাত না ধোয়ার আগেই নাক, মুখ, চোখ স্পর্শ করার মাধ্যমে।
📍 সংক্রমণের বিস্তার সর্বত্তম ভাবে রোধ করার উপায় গুলি হলো....
1. সাবান ও জল দিয়ে অন্তত 20 সেকেন্ড ধরে পরিষ্কার করা।
2. হাত না ধোয়া পর্যন্ত নাক, মুখ ও চোখে হাত দেওয়া থেকে বিরত থাকা।
3. সংক্রমিত ব্যক্তিদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা।
4. সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মেলামেশা করা।
5. ঘরের বাইরে অবশ্যই মাস্ক পরে বেরোতে হবে।
6. অপ্রয়োজনে ঘরের বাইরে না বেরোনোই ভালো।
0 Comments
If you have any doubt, please let me know.