বিশ্ব উষ্ণায়ন ( Global Warming )

 বর্তমান বিশ্বে পরিবেশ বিষয়ক আলোচনায় সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো "বিশ্ব উষ্ণায়ন"।

সাধারণ ভাবে অত্যধিক পরিমানে জীবাশ্ম জ্বালানি দহনের ফলে উদ্ভূত গ্রীন হাউস গ্যাসের প্রভাবে ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুস্তরের ( নিম্ন ট্রপোস্ফিয়ার ) উষ্ণতার ক্রম বৃদ্ধিকেই বিশ্ব উষ্ণায়ন বলাহয়।


বিশ্ব উষ্ণায়ন (Global Warming) বর্তমান বিশ্বে পরিবেশগত প্রধান সমস্যাসমূহের অন্যতম। এটি জলবায়ুগত এমন এক পরিবর্তন আসন্ন করছে, যা প্রক্রিয়াগতভাবে গ্রিনহাউজ প্রভাবের সাথে তুলনীয়। সমস্যাটিকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নিয়ে আসার বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি। কারন পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের তাপমাত্রা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। বিগত ৮০০০ বছর ধরে এই তাপমাত্রা প্রায় স্থির ছিল । কিন্তু গত ১০০ বছরের হিসেবে প্রমাণিত যে এই তাপমাত্রা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে । গবেষণা করে দেখা গেছে, বিগত ১০০ বৎসরে পৃথিবীর তাপমাত্রা ০.৫° C বৃদ্ধি পেয়েছে ।


বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, ২০৫০ সালের মধ্যে পৃথিবীপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ১.৫°-২.০° C পর্যন্ত এবং ২১০০ সালের মধ্যে ১.৮°C থেকে ৬.৩° C এর মতো বৃদ্ধি পেতে পারে । (NASA-র Goddard Institute for Space Studies) করা অনুমিত হিসাব অনুযায়ী২০০৫ সাল ছিল সবচেয়ে উষ্ণ বছর।


পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের রাসায়নিক গঠনটি একশত বৎসর পূর্বের অবস্থা থেকে ইতিমধ্যে সম্পূর্ণ ভিন্ন এক অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে এবং প্রকৃতপক্ষে বর্তমানের প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে নিকট ভবিষ্যতে এই পরিবর্তিত অবস্থাকে পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। একশত বৎসর পূর্বের গড় তাপমাত্রার তুলনায় বর্তমান বিশ্বে গড় তাপমাত্রা প্রায় ০.৬০°সে বৃদ্ধি পেয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে যে, ২১ শতকের সমাপ্তিকালের মধ্যে বিশ্ব তাপমাত্রায় আরও অতিরিক্ত ২.৫° থেকে ৫.৫°সে তাপমাত্রা যুক্ত হতে পারে। ফলে, পৃথিবীর সমুদ্রপৃষ্ঠের জলের স্ফীতি, অত্যুচ্চ পর্বতের বরফশীর্ষ এবং মেরু অঞ্চলের হিমবাহের দ্রুত গলনের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের জলের উচ্চতার ক্ষেত্রে একটি বৃহৎ পরিবর্তন ঘটতে পারে। সর্বপরি জীবজগতের বিনাশ ঘটবে।

Post a Comment

0 Comments